সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশ্যে সফর সঙ্গী সহ ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী।

দৈনিক বাংলার রূপ

0
13

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশে সফর সঙ্গী সহ ঢাকা ছাড়লেন বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকাল ১০টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা আকাশে উরাল দেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে বিদায়ী সংবর্ধনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদের জ্যেষ্ঠ সদস্য, সরকারের সংশ্লিষ্ট সচিব, তিন বাহিনী প্রধান, সহ সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক ব্যক্তিরা।
জানা গেছে, আগামী ১৪ ও ১৫ জুন জেনেভায় অনুষ্ঠেয় ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট: সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’ এ যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর সুইজারল্যান্ড এর এই সফর।

সকাল ১০টায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন এবং স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় ফ্লাইটটি জেনেভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ সফরে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার, ইউএনএইচসিআর প্রধান ফ্লিপো গ্র্যান্ডি ১৪ জুন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।পরে প্রধানমন্ত্রী প্যালাইস ডি নেশনস-এ সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বারসেটের এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এরপর সেখানে বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা রয়েছে।এছারাও বিকেলে, প্রধানমন্ত্রী প্যালাইস ডি নেশনস-এ “ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট ২০২৩” এর প্লেনারিতে ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেখানে পৌঁছালে আইএলও’র এডিজি ও আঞ্চলিক পরিচালক তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।ফটক থেকে সভাস্থল পর্যন্ত লালগালিচা বিছানো হবে এবং গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।এই সফরে শেখ হাসিনার মাল্টার প্রেসিডেন্ট ড. জর্জ ভেলার সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে। পরে তিনি আইএলও মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাউংবোর সঙ্গে বৈঠক করবেন।

প্রধানমন্ত্রী এদিন সন্ধ্যায় আইএলওর সদর দফতরে উচ্চপর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জন্য ডিজি কর্তৃক আয়োজিত একটি নৈশভোজে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

১৫ জুন, প্রধানমন্ত্রী ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) অফিসে ডব্লিউইএফ-এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে একটি বৈঠকের পরে “এ টক অ্যাট দ্য ডব্লিউইএফ”-এ তার যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। সেখানে তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) আয়োজিত ‘নিউ ইকোনমি অ্যান্ড সোসাইটি ইন স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন। সন্ধ্যায়, ডব্লিউটিও মহাপরিচালক ড. ওকোনজো-আইওয়ালা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার অবস্থানস্থলে সাক্ষাৎ করবেন। সন্ধ্যায় তিনি একটি কমিউনিটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। কর্মসূচি শেষে সুইজারল্যান্ডে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের নাগরিক সংবর্ধনাতেও বক্তব্য দেয়ার কথা রয়েছে সরকার প্রধানের৷

আগামী শুক্রবার (১৬ জুন) রাতে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

‘‘দ্য ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট ২০২৩: সবার জন্য সামাজিক ন্যায়” হচ্ছে সামাজিক ন্যায়বিচারের সমর্থনে অধিকতর, সমন্বিত এবং সুসংগত পদক্ষেপের প্রয়োজনে বিশ্বব্যাপী সোচ্চার হওয়ার একটি উচ্চপর্যায়ের ফোরাম। এটি সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি গ্লোবাল কোয়ালিশন গঠনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা ও অবহিত করার সুযোগ দেবে। আন্তর্জাতিক শ্রম অফিসের ৩৪৭তম অধিবেশনে গভর্নিং বডি এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।

ফ্রান্সের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ, পানামার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জুয়ান কার্লোস ভারেলা এবং ২০১৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী, এবং নিয়োগকর্তা ও শ্রমিকদের প্রতিনিধিসহ বেশ কয়েকজন উচ্চপর্যায়ের অতিথি সম্মেলনে ভাষণ দেবেন।

দুদিনের এই শীর্ষ সম্মেলনটি আরও টেকসই এবং ন্যায়সংগত বিশ্ব তৈরিতে সামাজিক ন্যায়বিচারের মূল ভূমিকা তুলে ধরবে এবং সামাজিক ন্যায়বিচারকে এগিয়ে নিতে এবং নীতির সুসমন্বয় নিশ্চিত করার জন্য বর্ধিত ও অধিকতর সংগত যৌথ পদক্ষেপের কৌশল নিয়ে আলোচনা করবে। এ সম্মেলন হচ্ছে অংশগ্রহণকারীদের জন্য একটি ফোরাম যেখানে তারা সামাজিক ন্যায়বিচার সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও অগ্রাধিকারগুলো সম্পর্কে মতবিনিময় করার পাশাপাশি সামাজিক ন্যায়বিচারকে এগিয়ে নিতে তাদের পদক্ষেপ ও অঙ্গীকারগুলো তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছে।

আশা করা হচ্ছে এ শীর্ষ সম্মেলনের ফলাফল বৃহত্তর সামাজিক ন্যায়বিচার অর্জনের কৌশলগুলো সম্পর্কে অন্যান্য বহুপাক্ষিক ফোরাম যেমন, ২০২৩ সালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য শীর্ষ সম্মেলন, জি২০ এবং ব্রিকস দেশসমূহের শীর্ষ সম্মেলনের আলোচনায় তুলে ধরা হবে। শীর্ষ সম্মেলনে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান, জাতিসংঘের মহাসচিব, আইএলও মহাপরিচালক এবং নিয়োগকর্তা ও শ্রমিক সংগঠনের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা ভাষণ দেবেন।

বহুপাক্ষিক ব্যবস্থায় সামাজিক ন্যায়বিচারের লক্ষ্যে পদক্ষেপগুলো চিহ্নিত ও সম্প্রসারিত করতে এবং একটি যৌথ, সুসংগত ও সমন্বিত অঙ্গীকারের লক্ষ্যে সরকার এবং নিয়োগকর্তা ও শ্রমিকদের সংগঠন, জাতিসংঘের সংস্থা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে চারটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে।