মোঃশাহিনুর ইসলাম সাহিন
মধুপুর (টাঙ্গাইল)প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কুড়ালিয়া ইউনিয়নের দামেরবাড়ী নামক স্থানে কয়েকশো বছরের পুরনো একটি বটগাছ সোমবার( ২১জুন) বিকাল ৫টায় হঠাৎ বিকট শব্দে বংশাই নদীতে উল্টে পড়ে। ঘটনাটি মুহুর্তের মধ্যেই এলাকায় জানা জানি হয়ে যায়।ফলে ঘটনাটি একনজর দেখার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে শতশত মানুষ বহু পূরানো স্মৃতি বিজরিত এই বটবৃক্ষকে দেখতে ভীড় জমান। প্রত্যক্ষদর্শী- দামেরবাড়ীর স্বর্গীয় শ্রী শ্যামল চন্দ্র ঘোষের বড় ছেলে সন্জীব ঘোষ জানান- আমার পূর্ব পুরুষরাও সঠিক বলতে পারেনি এই বটগাছের বয়সের কথা। এই বটগাছের বয়স কেউ কেউ ৪/৫ শো বছর হবে বলে জানিয়েছেন। এই বটবৃক্ষে সব সময়েই ৪/৫টি মৌমাছির বাসা থাকে সেখান থেকে এলাকাবাসী খাঁটি মধু সংগ্রহ করে থাকেন। এছাড়াও একশ্রেনীর সাপ যাকে আমাদের এলাকার মানুষ বলে কর্কো সাপ বাস করত,এছাড়াও হরিকালি নামক পাখি সহ বিভিন্ন প্রকার পাখির বসবাস ছিলো। কুড়ালিয়া গ্রামের একমাত্র হিন্দু পরিবার বাস করেন বংশাই নদীর তীর ঘেঁষে ঐতিহ্যবাহী দামেরবাড়ী নামক এলাকায় এবং পাশেই বসবাস করেন একটি শীল পরিবার। এই দুই পরিবার মিলে বংশাই নদীর তীর ঘেঁষে বহু পূরানো একটি কালীমন্দির ছিলো যা বটগাছের সাথেই উল্টে নদীতে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে । পূর্ব পুরুষ শ্রী দাম চন্দ্র ঘোষের বংশধর সূত্রেই এই বাড়ীটির নামকরণ করা হয় দামেরবাড়ী, ফলে দামেরবাড়ী বলেই এলাকাবাসীর কাছে পরিচিত। এই ঐতিহ্যবাহী ঘোয(কায়স্ত) পরিবারের ছেলে স্বগীয় শ্রী যোগেশ চন্দ্র ঘোষের ৪ ছেলে যথাক্রমে ১.স্বর্গীয় গোপাল চন্দ্র ঘোষ ২. স্বর্গীয় শ্রী শ্যামল চন্দ্র ঘোষ ৩. স্বর্গীয় নির্মল চন্দ্র ঘোষ ও ৪. শ্রী শংকর চন্দ্র ঘোষ এবং তার ৫ কন্যা ১.বেলী ২.ফুলী ৩, প্রভা ৪, অন্জলী ও ৫. আন্না। এই পরিবারের গোপাল চন্দ্র ঘোষ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন এবং শ্যামল চন্দ্র ঘোষ মধুপুর পৌর শহরে সন্জীব মেশিনারি স্টোর এবং আনারসের ব্যবসায় ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। বর্তমানে এই হিন্দু পরিবারটি অভিভাবক বিহীন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের একমাত্র পুরনো ঐতিহ্য শতবছরের বটগাছ এবং তার সাথে পূজা অর্চণার একমাত্র মন্দিরটি বট গাছের সাথেই বংশাই নদীতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। এই হিন্দু পরিবার সদস্যদের দাবি তাদের একমাত্র পূজা অর্চণার কালীমন্দিরটি পুনরায় নির্মান করে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন যাতে তারা পুনরায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নির্ভিগ্নে মন্দিরে উপাসনা করতে পারে।