বাংলার রূপ
ডেস্ক রিপোর্টঃ
রাজধানীর ফার্মগেটে সরকারী নির্দেশ অমান্য করে কোচিং বাণিজ্য চলছে। সোমবার (২৫ জানুয়ারী) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় যে, ফার্মগেটের আশপাশে থাকা প্রায় অর্ধশতাধিক কোচিং সেন্টার খোলা রয়েছে। সাধারণত সকাল ৭ টা থেকে শুরু করে রাত ৯ টা পর্যন্ত কোচিং গুলোর কার্যক্রম চলে।
জানা যায়, ফার্মগেটের সকল কোচিং করোনার প্রথম ঢেউতে বন্ধ থাকলেও দ্বিতীয় ঢেউয়ে কার্যক্রম থেমে নেই । এমন
অভিযোগের ভিত্তিতে গত সপ্তাহে গিয়ে তা সত্যতা পেয়েছে কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী। এ নিয়ে বেসরকারী শীর্ষ এক টিভি চ্যানেলে এক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল। কিন্তু এরপর ও কোচিং বাণিজ্য চলছে। সরকারী আদেশ অমান্য করে কোন যুক্তিতে কোচিং বাণিজ্য পরিচালনা করছে তা নিয়ে একজন পরিচালকের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক আর ভ্যাকসিন দেশে আসার আভাস পাওয়াতে এই মাসের শুরুতে ক্ষুদ্র পরিসরে কোচিং চালানোর উদ্যোগ নিয়েছি। এর মধ্যে গত সপ্তাহে সাংবাদিক আসাতে পরেরদিন কীভাবে কোচিংয়ের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা যায়,তা নিয়ে জরুরী ভিত্তিতে মিটিং কল করেন ফার্মগেট জোনের সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম সাখাওয়াত। মিটিংয়ে ফার্মগেট জোনের সভাপতি মোস্তফা পাটোয়ারী তার বক্তব্যে বলেন, সাংবাদিক আর প্রশাসনিক ম্যানেজের ক্ষমতা মাহাবুব আরেফিনের মতো দ্বিতীয় কোন ব্যক্তি নেই দেশে। যা আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি।
উক্ত এজেন্ডা নিয়ে ফার্মগেট জোনের মাহাবুব আরেফিন বক্তব্যকালে বলেন, পূর্বের মতো ফার্মগেটের সকল কোচিং পরিচালক একত্রিত হতে পারলে সাংবাদিক ম্যানেজের দায়িত্ব নিবেন। অন্যথায় নয়। এ বলে প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে আপতকালীন চাঁদা বাবদ এক হাজার টাকা করে ধার্য করেন।
গত তিন বছরে মাসিক চাঁদা ব্যতীত প্রায় দশবার সাংবাদিক ও প্রশাসন ম্যানেজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আপতকালীন চাঁদা আদায় করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ফার্মগেটের এক কোচিং পরিচালক বলেন, আনীত অভিযোগটি সত্যি। তবে টাকা দিয়ে সাংবাদিক ম্যানেজ করা সম্ভব নয় বলে আমার ধারণা। এরপর ও কোচিং পরিচালনা করতে গিয়ে অতীতে বেশ কয়েকবার আপতকালীন চাঁদা দিয়ে আসছি। কিন্তু এইবার কোন প্রকার চাঁদা দেওয়া হয়নি। কেননা অতীতেও তারা আপতকালীন চাঁদা বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা সংগ্রহ করে ব্যয় খাতের বিষয়টি স্পষ্ট করেনি কোচিং পরিচালকদের। পূর্বের আর্থিক লেনদেনে সংশয় থাকাতে পরিচিত দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সাংবাদিকতা পেশায় থাকা দৈনিক ইত্তেফাকের এক সিনিয়র সাংবাদিক কে বিষয়টি অবগত করি এবং জানতে চাই আসলেই সাংবাদিক দের সাথে পূর্বে বা এখনকার সময়ে কোন আর্থিক লেনদেন করছে কি না। তখন উত্তরে তিনি বলেন, সাংবাদিকতার মতো মহান পেশা নিয়ে অপপ্রচার কখনো মেনে নিবো না। যার কারণে সাংবাদিক ম্যানেজ নিয়ে বিগত দিনে অভিযুক্ত চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলেও আমাকে জানিয়েছেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাহাবুব আরেফিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অতীতে বা বর্তমানে কোচিং পরিচালকদের কাছ থেকে কোন প্রকার আপতকালীন চাঁদা আদায়ের আমার সম্পৃক্ততা ছিল না।
উপরোক্ত অভিযোগ নিয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব শ্যাডো এডুকেশন বাংলাদেশ ( অ্যাসেব) এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিভাগীয় দায়িত্বে থাকা তামিমা এম মিতুয়া বলেন, আমাদের কোন সদস্য বা গোষ্ঠী এরকম কোন কাজের সাথে যুক্ত হলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা শুনেছি সাংবাদিকদের ম্যানেজ করবার জন্য টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো। আর সেইসঙ্গে বহিষ্কৃত সদস্য হয়ে যারা এসব কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আলোচনা করা হবে ও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক ম্যানেজের দায়িত্বভার মাহাবুব আরেফিন নিয়ে থাকলেও তিনি গত বছরেই কোচিং পরিচালকদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব শ্যাডো এডুকেশন’ ( অ্যাসেব) সংগঠনটি থেকে বহি:স্কৃত।