শেরপুরে ‌বাঙালী নদীর ভাঙ্গনের কবলে ১০ গ্রাম,আতঙ্কে জনসাধারণ।

0
12
এজেড হীরা
শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি:
চলমান  বর্ষায় বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় বাঙালী নদীতে পানি বৃদ্ধিএবং তীব্র স্রোতের কারনে  অব্যাহত ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে । নদী তীরবর্তী  বিভিন্ন এলাকার অনেক বাড়ীঘর বিলীন হয়েছে গেছে নদীগর্ভে।
জানা যায়, উপজেলার বাঙ্গালী নদী বেষ্টিত   ঝাঁজর, বিলনোথার, নলডিঙ্গিপাড়া,  চক খানপুর, গজারিয়া,বড়ইতলী, চকধলী, চককল্যানী, কল্যানী, আওলাকান্দি, বিনোদপুর, জোড়গাছা, সুঘাট মধ‍্যভাগ, সহ  নদী তীরের অনেক  এলাকার ফসলি জমি ও বাড়িঘর অনেকটাই  এখন বিলীনের পথে ।  বর্ষার করাল গ্রাসে শিকার হওয়া এসব অঞ্চলের বসবাসকারী জনসাধারণের  মধ‍্যে  বিরাজ করছে নদী ভাঙ্গনের আতঙ্ক।
  উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চক কল্যানী গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় নদী ভাঙ্গনের দৃশ‍্য। রয়েছে এ অঞ্চলে বন্যার আশংকা। নদী পাড়ের বসতিরা নদীর তীরের  অব‍্যাহত ভাঙ্গন  কবলের মুখে  পড়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে । নদী ভাঙ্গনের কারণে জীবন বাঁচাতে  এসব বাসিন্দারা  বসতবাড়ি সরানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
চলমান  ভাঙ্গনে সম্প্রতি  বেশ কিছু  বাড়িঘর, ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ও রাস্তাঘাট বাঙালি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। অথচ বাঙালি নদীর কোথাও কোন স্থায়ী বাঁধ নির্মান করা হয়নি।
বাঙালি নদীর ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারানো চক কল্যানী গ্রামের নজরুল, বক্কার, ছামসুল, মজিদ, মহির উদ্দিন, মফিজ  সহ অনেকেই  দৈনিক জবাবদিহি কে বলেন, আমরা গত ৪ বছর যাবৎ নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে  বসতবাড়ি হারিয়েছি। এবারো নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছি। প্রতি বছরেই নদী ভাঙ্গনের ফলে আমরা সংসারের ঘাটতি থেকে উঠতে পারছিনা। এতো পরিশ্রম করে চাষাবাদ করেও যদি নদী ভাঙ্গনের কারণে ঘাটতি থেকে না উঠতে পারি তাহলে কিভাবে আমরা চলবো। আমাদের বসতবাড়ি ও গ্রামগুলো রক্ষার জন্য সরকারের কাছে স্থায়ী বাঁধ নির্মানের দাবী জানান নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা।
বাঙালি এবং করতোয়া নদীর তীর সংরক্ষণের জন‍্য সম্প্রতি দরপত্র আহবান করা হলেও শুরু হয়নি  বাঁধ রক্ষার কোন কাজ।  ফলে বাঙালী নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিস্তৃর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করে জনসাধারণেরা।
অপরদিকে শেরপুরে অল্প দিনে গঁজে উঠা  এক শ্রেণীর মুনাফালোভী  মাটিও বালু খেকো ব্যবসায়ীরা  বিভিন্ন  ছত্রছায়ায় থেকে শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু তোলার কারনে বিশেষ করেই এসব স্পটে ঘটছে বেশীর ভাগ ভাঙ্গনের ঘটনা । এতে করে নদীকুলীয় মানুষগুলো বাড়ি-ঘর হারানোর আশংকায় দিনাতিপাত করছেন । বিষয়গুলো প্রশাসনের গোচরে দেওয়া হলে   প্রায়ই ভ্রাম্যমাণ  আদালতে  পরিচালনা করে জড়িত বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে স্হান ত‍্যাগের পরেই আবার  বেপরোয়া মুর্তিতে স্ব ব‍্যবসায় আর্বিভুত হয়ে ফিরে বীর দর্পে কা শুরু করেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি, ধুনট ও শেরপুর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বাঙালী নদীর ১৯ কিলোমিটার এলাকায় ২২ লটে নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ করার কথা। এছাড়াও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ওই নদী খনন করা হবে বলে জানা গেছে। এজন্য সরকারের ব্যয় হবে ৩২০ কোটি টাকা। এ কাজের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ১৫ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই বগুড়ার ঐ ৪ উপজেলায় নদীর তীর সংরক্ষণের জন্য  সিসি ব্লক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এখনো পর্যন্ত শেরপুর উপজেলায় নদী খননের কাজ শুরু হয়নি বলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে। এদিকে বাঙালী নদীর অব্যাহত ভাঙনে চলতি বর্ষা মৌসুমে শেরপুর উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এ বিষয়ে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাহবুবুর রহমান জানান, বগুড়ার অংশে ১৯ কিলোমিটার বাঙালী নদী ভাঙনরোধে তীর সংরক্ষণ ও নদী খননের কাজ বগুড়ার ধুনট উপজেলা থেকে শুরু হয়েছে। নদী খননের কাজ হবে আগে। সেনাবাহিনী নদী খননের কাজ তদারকি করবেন। নদীর তীর সংরক্ষণের কাজের  জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা সিসি ব্লক তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বন্যার পানি নেমে গেলেই খননকাজ বা তীর সংরক্ষণ কাজ শুরু হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here