এলাহী শাহরিয়ার নাজিম
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
করোনা মহামারির কারণে বিঘ্নিত হওয়া কেনাবেচা স্বাভাবিক করতে এখন থেকে কোরবানি ঈদের আগেরদিন পর্যন্ত প্রতিদিনই হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রৌমারী হাটবাজার কর্তৃপক্ষ।
মাইকে এমন একটি প্রচারণা আজ শনিবার দুপুর ২টা থেকে চালানো হয়েছে। এতে ব্যবাসায়ী ও খামারীদের মধ্যে অনেকটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা টানাপোড়েনে থাকা গরুর হাটে অচলাবস্থা বিরাজ করছিল। ঈদ পর্যন্ত লকডাউন তুলে নেয়ার সরকারী ঘোষণা ও রৌমারীতে টানা হাট বসানোর সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ী-খামারীসহ সকল ক্রেতাসাধারণ দারুন খুশি হয়েছেন।
তাজুল ইসলাম নামের একজন খামারী জানান, গত ৮ মাসে ৩টি গরু পালন করেছি। গতহাটে নিয়ে এসেছিলাম দাম কম থাকায় বিক্রি করতে পারিনি। এ হাটে নিয়ে এসেছি কিন্তু বিক্রি হবে কিনা জানি না। কারণ ৩টি গরুতে আমার যা খরচ হয়েছে বর্তমান বাজারে বিক্রি করলে তেমন লাভ হয় না। এদিকে সমস্যা পড়েছি যে, আজ বিক্রি করতে না পারলে আর মাত্র সামনে একটা হাট পাবো তাতে যদি বিক্রি না হয় তাহলে মাঠে মারা যাবো।
রবিউল নামের একজন ব্যবসায়ী জানান, প্রতিবছর কোরবানীর ঈদে যা বিকিকিনি হয় তা দিয়ে পুরো বছর আমার সংসার চলে। কিন্তু করোনার কারণে বলতে গেলে প্রায় দু’বছর থেকে ব্যবসা বন্ধ। এনজিও থেকে ঋন করা টাকার তো কিস্তি দিতে হয়। সেদিক থেকে আমার ব্যবসা লাটে উঠেছে। হাট কমিটির ঈদ পর্যন্ত হাট চালানোর সিদ্ধান্তে আমাদের মাঝে স্বস্তি ফিলে এসেছে। আশা করছি এ কয়দিনের ব্যবসা ভাল হলে আগামি বছর সংসারের চিন্তু কিছুটা কম থাকবে।
কোরবানির পশু কিনতে আসা গয়টাপাড়ার সুমন আহমেদ জানান, গত দুই হাটে মহিষ কিনতে এসে মানুষের অতিরিক্ত ভিড় দেখে বাসায় ফেরৎ গেছি। মাইকে ঘোষণা শুনে স্বস্তি বোধ করছি। অন্তত সামাজিক দূরত্ব মেনে পশু কেনা যাবে।
এদিকে রৌমারী হাট ইজারাদার সোহেব আহমেদ সকল ক্রেতা, খামারী ও ব্যবসায়ীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত হাটে এসে দীর্ঘদিনের স্থবির ব্যবসা কিছুটা পুশিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি দুরদুরান্তরের ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা, রাতযাপন ও নানা সমস্যার কথা চিন্তা করে অনেক পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাসহ হাটের সদস্যগণ হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তায় সদা প্রস্তুত রয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে।