রূপগঞ্জের মুশুরী-কাঞ্চন ও শিমুলিয়া-দাউদপুর সড়ক যেন মরণফাঁদ।

0
4
খোরশেদ আলম
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার এলজিইডি‘র অধীনের প্রায় সবকয়টি সড়কই বেহাল দশায় পরিনত হয়ে রয়েছে। বর্ষা বৃষ্টির ও দিনে কাঁদাপানি, খানাখন্দ আর গর্তের ভোগান্তি বাকি সময়ে কুয়াশার মতো ধুলোবালি আর ভাঙ্গাচোরা সড়কগুলো মরা খালে পরিনত হয়ে রয়েছে। শীতলক্ষ্যার পূর্বপাড়ের রূপসী কাঞ্চন সড়কের মেরামত কাজ চলমান থাকলেও পশ্চিমপাড়ের ডেমড়া কালীগঞ্জ সড়ক সড়কের অধীনে মুশুরী থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার এবং একই সড়কের শিমুলিয়া বাজার থেকে দাউদপুর পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়ক জুরে খানাখন্দ ও গর্তে পরিণত। এতে স্থানীয় জনসাধারণের যাতায়াত ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শীতলক্ষ্যার পশ্চিমপার দিয়ে রাজধানী ডেমরা হতে রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া, রূপগঞ্জ সদর ও দাউদপুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে গড়া গাজীপুরের কালীগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য একটি সড়ক রয়েছে। স্থানীয়দের উপজেলা সদর, থানা পুলিশের সেবা, একমাত্র সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবাসহ সরকারী বেসরকারী নানাসেবা নিতে একমাত্র সড়ক এটি। অথচ সড়কটি দীর্ঘ বছর যাবৎ খানাখন্দে ও স্থানে স্থানে ধ্বসে পড়লেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। রাতের আঁধারে মালবাহী ভারী যান চলাচল করায় সড়কটির মুশুরী থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত ৫ কিলোমিটারে শতাধিক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে সামান্য বৃষ্টি হলেই জমে থাকে পানি আর কাঁদামাটি। তাই যানবাহন চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা। আবার শিমুলিয়া বাজার থেকে দাউদপুর পর্যন্ত পুরো রাস্তায় ড্রেনের মতো হয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ পথে চলাচলরত যানবাহন ও সাধারণ লোকজন। ভোগান্তির শেষ নেই রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হতে আসা রোগীদেরও ।
সরেজমিন ঘুরে আরো দেখা যায়, এ সড়কের পাশ্ববর্তি কলকারখা ও বালু মহালের মালামাল বহনের কাজে ব্যবহৃত ভারী যান ও সাধারন যাত্রীবাহী যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। মুশুরী ও ভক্তবাড়ি এলাকায় বালির ব্যবসায়ী অন্যদিে
ক দাউদপুর এলাকায় ইটভাটা মালিকরা ইছারমাথা নামীয় যান চালিয়ে রাস্তাকে অচল করে দেয়ার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
সূত্র জানায় এ সড়কের পাশে ১৫টি বৃহৎ শিল্পকারখানা ও আরো ২০টি ক্ষ’দ্র কারখানাসহ ২টি বালু মহাল রয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে আরো জানা যায়, সম্প্রতি ডেমরা কালীগঞ্জ সড়কের কাঞ্চন ব্রিজ থেকে দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত উভয় পাশে ৩ ফুট করে প্রশস্তকরণ কাজ চলছে। কিন্তু একই সড়কের ভিংরাব এলাকার ২কিলোমিটার এলাকাজুরে এ রাস্তায় পার ধ্বসে পাশের পুকুরে ও ধানী জমিতে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল হক ঝিনু ভুইয়া বলেন, সড়কগুলো মেরামত না করায় আমরা গতিহীন হয়ে পড়েছি। বারবার সাংবাদিকরা ছবি তুলে পত্রিকায় প্রকাশ করলেও দীর্ঘদিন যাবৎ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। অথচ এ সড়কটি এখন বন্ধ হয়ে গেলো প্রায়। দুএকটা ভারী যান ছাড়া সাধারন গাড়ী চলাচল কমে গেছে।
রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন ভুঁইয়া দৈনিক বাংলার রূপ কে বলেন, সড়ক মেরামতের জন্য নিজস্ব অর্থায়নে ইট সুড়কী দিয়েছি। কিন্ত স্থায়ী সমাধান হয়নি। এ সড়কটি অতি দ্রুত সংস্কার করা জরুরী।
স্থানীয় পিতলগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা মনিরুজ্জামান ভুইয়া দৈনিক বাংলার রূপ কে বলেন, অতি গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক মেরামত জরুরী হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বরাদ্দ পেয়েও কেন কাজ করছেন না তা নিয়ে এলাকাবাসির চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মুশুরী এলাকার বাসিন্দা নয়ন মিয়া এই প্রতিবেদক কে বলেন, এ সড়কে ইটা, বালি ও পাথর বহন করায় এ সড়কটির স্থায়ীত্ব রক্ষা করা যাচ্ছে না। সংস্কার করলেও ৬ মাস না যেতেই ভেঙ্গে যায় এ অঞ্চলের রাস্তাঘাট।
দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাষ্টার দৈনিক বাংলার রূপকে বলেন, এই এলাকার রাস্তা ঘাট হালকা যান চলাচলের জন্য নির্মাণ করলেও স্থানীয় ইটভাটা মালিকদের ইচ্ছে  মত ও ইটাবহনকারী ট্রাক চলাচল করে রাস্তা ঘাট ভেঙ্গে দেয়। ফলে স্থায়ীভাবে সড়ক করতে বড় বরাদ্দ প্রয়োজন। ইতোমধ্যে কাজ চলমান থাকলেও রহস্যজনকভাবে ঠিকাদার কাজ বন্ধ রেখেছে। এতে স্থানীয় জনসাধারন ক্ষোভ প্রকাশ করছে এমনকি আমিও বিব্রত হই।
এদিকে ঠিকাদার হাবিবুর রহমান হাবিব দৈনিক বাংলার রূপকে বলেন, সড়কটি মেরামতে ইতোমধ্যে বরাদ্দ পেয়েছি। এর কাজ শুরু হয়েছিলো। সড়ক প্রশস্তকরন ও বিদ্যু খুঁটি অপসারনের কাজের জন্য কাজ করতে পারিনাই। তবে শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।
এসব বিষয়ে এলজিইডি বিভাগের রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন বলেন, রূপসী-কাঞ্চন সড়কটি এশিয়ান ডেভেলপম্যান্ট সোসাইটির অর্থায়নে ৪ লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলমান। শীতলক্ষ্যার পশ্চিমপাড় এলাকার ডেমরা-কালীগঞ্জ সড়কের পূর্বাচল উপশহর ৪নং সেক্টর পর্যন্ত সড়কের উভয়পাশে ৩ ফুট করে প্রশস্তকরণ কাজ দ্রূত শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here