মোঃ সিরাজুল মনির
ব্যুরো প্রধান চট্টগ্রামঃ
দেশের সবচাইতে বড় পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজের জন্য চীন থেকে আনা প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা দামের বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রেন এখন চট্টগ্রামে। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থান করছে। আগামী এক মাস ক্রেনটি পারকী সৈকতের কাছে অবস্থান করবে। এখান থেকে যাত্রা করবে চীনে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানোর কাজে ব্যবহৃত ৩৬শ টন ধারণক্ষমতার তিয়ান-ই নামের ক্রেনটি চীন থেকে আনা হয়েছিল। তিন বছর নয় মাস এটি পদ্মার বুকে ছিল। পদ্মা সেতুতে স্প্যান বসানোর জন্য ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে আনা হয়েছিল ক্রেনটি। পদ্মা সেতুর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান চীনের চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি ক্রেনটি এনেছিল। ফেরি আকৃতির ভাসমান ক্রেনটি প্রায় বিশ বছরের পুরনো। তবে পদ্মা সেতুতে কাজ করার উপযোগী করতে ক্রেনটিতে বিশেষ ব্যবস্থায় যুক্ত করতে হয়েছিল। ক্রেনটি ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটারের পদ্মা সেতুতে ৪১টি স্প্যান বসানোর কাজ করেছে।
গত ১০ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুতে ৪১তম স্প্যান বসানোর কাজ সফলভাবে শেষ করে ক্রেনটি। পদ্মা সেতুর একেকটি স্প্যান ৪৯২ ফুটের বেশি লম্বা এবং ওজন ৩২০০ টন। এসব স্প্যান পিলারের ওপর স্হাপন করেছে এই ক্রেনটি। ভাসমান এই ক্রেন মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যান বহন করে পদ্মা নদীতে অবসি’ত পিলারগুলোতে স্হাপন করেছে। উন্মত্ত পদ্মায় স্প্যান বসানোর কাজে ক্রেনটি দক্ষতা দেখিয়েছে। কঠিন এই কর্মযজ্ঞে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। ওখানে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তিন শতাধিক ক্রেনের ব্যবহার হলেও স্প্যান বসানোর কাজ করত তিয়ান-ই।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, এই ক্রেন ব্যবহার করতে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষের দৈনিক ১ লাখ টাকা খরচ হতো। ৪৫ মাসে দানবাকৃতির এই ক্রেন ব্যবহারে খরচ হয় প্রায় ১৫ কোটি টাকা।
গত রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ক্রেনটি মাওয়া ঘাট থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। যাত্রাপথে ক্রেনটিকে পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী বিশেষ নিরাপত্তা দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানোর ব্যবস’া করে।
গতকাল ক্রেনটি বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। কাস্টমস প্রক্রিয়া শেষ করে এটি চীনের পথে যাত্রা করবে। চট্টগ্রাম থেকে হংকং হয়ে চীনে পৌঁছবে। তবে পথে সিঙ্গাপুর থেকে ক্রেনটিকে ট্রু করার কাজে নিয়োজিত টাগ জ্বালানি সংগ্রহ করবে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে চীন পৌঁছতে এক মাসের বেশি সময় লাগবে। আসতে সময় লেগেছিল প্রায় দেড় মাস।
গতকাল ক্রেনটি বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। কাস্টমস প্রক্রিয়া শেষ করে এটি চীনের পথে যাত্রা করবে। চট্টগ্রাম থেকে হংকং হয়ে চীনে পৌঁছবে। তবে পথে সিঙ্গাপুর থেকে ক্রেনটিকে ট্রু করার কাজে নিয়োজিত টাগ জ্বালানি সংগ্রহ করবে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে চীন পৌঁছতে এক মাসের বেশি সময় লাগবে। আসতে সময় লেগেছিল প্রায় দেড় মাস।
চট্টগ্রাম বন্দরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ক্রেনটি বহির্নোঙর হয়ে চীনের পথ ধরলেও এর সাথে বন্দরের সম্পর্ক নেই। তবে চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে ক্রেনটিকে যাত্রা করতে হবে।
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।