নালিতাবাড়ী আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ চরমে,দেখার কেউ নেই।

0
19

আমিরুল ইসলাম,
শেরপুর প্রতিনিধি :

“ঘর অহন ভাইঙ্গা পড়তাছে”বৃষ্টি আইলে পানি পড়ে, টিনের চালের উপর কাগজ বিছাইয়া থাকতাছি। কেউ আমগোর খোঁজখবর নেয় না। আমরা কোন সুযোগ সুবিধাও পাই না।’এভাবেই আবেগ আপ্লুত হয়ে কথাগুলো বললেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান ইউনিয়নের ৯ নং ওর্য়াডের কোন্নগর দুগাংগারপার আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা লুৎফর রহমান (৬০)।

দরিদ্র অসহায় মানুষের বাসস্থান নিশ্চিত করার লক্ষে বিগত ২০০৮ সালে দুগাংগারপাড় আশ্রয়ন প্রকল্প ফেইজ- ২ নামের এই আবাসন প্রকল্পটি ৫ একর ১৮ শতাংশ জমিতে সরকারী নির্দেশনায় খাস জমিতে নির্মাণ করা হয়। এই আবাসনে ৮০টি পরিবারের প্রায় আড়াই শতাধিক মানুষ বসবাস করেন। প্রতি ১০ টি পরিবারের জন্য একটি করে যৌথ টয়লেট ও টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়। নির্মাণের প্রথম কয়েক বছর ভালোই ছিল। বসবাস অযোগ্য হওয়ায় কয়েকটি পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। বর্তমানে প্রতিটি পরিবারের জন্য বরাদ্দকৃত টিনশেড ঘরের চাল জং ধরে ছিদ্র হয়ে পড়েছে। বেড়ার টিনও খসে খসে পড়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির মৌসুমে ঘরে পানি পড়ে। তখন কোন পরিবারই শান্তিতে ঘুমাতে পারেন না। এখানকার স্যানিটেশন ব্যবস্থা খুবই নাজুক। টয়লেটের অবস্থা খুব খারাপ। নষ্ট হয়ে গেছে সরকারীভাবে স্থাপনকৃত সবগুলো টিউবওয়েল। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্থাপিত ৫ টি টিউবওয়েলের সাহায্যে তারা পানীয় জল ব্যবহার করছেন। এই প্রকল্পের ঘরগুলো নির্মাণ করে হস্তান্তরের পর আর কেউ আর দেখভাল করেননি বলে বাসিন্দারা জানান। তারা দ্রæত ঘর মেরামত বা নতুন ঘর নির্মাণের দাবি জানান।

ওই আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা ছফর আলী ও রোকেয়া বেগম বলেন, শুষ্ক মৌসুমে ঘরে রাত্রি যাপন করতে পারলেও বর্ষা মৌসুমে আমাদের দুর্ভোগ বাড়ে। সবগুলো ঘর পুরাতন হওয়ায় এর টিনের চাল ছিদ্র হয়ে মেঝেতে পানি পড়ে। এমনকি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে ঘর দরজাতেও হাটু পানি থাকে। আমরা প্রায় ৩/৪ বছর যাবত কষ্টে বসবাস করে আসলেও কেউ আমাদের খোঁজখবর নেয় না।
দুগাংগারপাড় আশ্রয়ন প্রকল্প ফেইজ- ২ সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদির বলেন, আমরা এই আবাসনের ৮০টি পরিবারের লোকজন খুব কষ্টে আছি। আমাদের ঘর দরজা নষ্ট হয়ে গেছে। দিনদিন আমাদের জায়গা পাশ^বর্তী লোকজন বেদখল করছে। কেউ কেউ পুকুর পাড়ের গাছ কেটে নিচ্ছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের জায়গায় আবার কেউ দোকানঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। আমাদের জায়গা সংকুচিত হওয়াতে আমরা ইতোমধ্যে সীমানা নির্ধারন করার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদনও করেছি।

এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, আবাসন প্রকল্প ফেইজ- ২ এর যেসব ব্যারাক নষ্ট হয়ে গেছে সেসব স্থানে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের দুইকক্ষ বিশিষ্ট পরিবেশ বান্ধব পাকাঘর নির্মাণ করে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। এমনকি খুব দ্রুত এ কার্যক্রম গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here