চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের ডেমু ট্রেন কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।।

0
21
মোঃ সিরাজুল মনির
ব‍্যুরো প্রধান চট্টগ্রামঃ
বাংলাদেশ রেলওয়ে আধুনিক যাত্রীসেবার প্রত্যয় নিয়ে ২০১৩ সালে রেলের বহরে যুক্ত হয় সুসজ্জিত ২০ সেট ডেমু ট্রেন। সাত বছরের মধ্যে ১৬ সেট অচল হয়ে পড়ে আছে বিভিন্ন ওয়ার্কশপে। অবশিষ্ট ৪ সেট খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের চার রুটে। ৬৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয় করা ২০ সেট ডেমু সাত বছরে আয় করেছে মাত্র সাড়ে ২১ কোটি টাকা। আর সাত বছরে এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় হয়েছে ৯ কোটি ৬ লাখ ১৯ হাজার টাকা। সাত বছরে নিট লাভ হয়েছে মাত্র ১৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।

রেলওয়ের সহকারী পরিচালক (অপারেশন) সাইদুর রহমান জানান, ২০ সেট ডেমুর মধ্যে পূর্বাঞ্চলে ১৮ সেট চলত। পশ্চিমাঞ্চলে চলত ২ সেট। পশ্চিমাঞ্চলের ২ সেটের মধ্যে এখন আর একটিও চলে না। পূর্বাঞ্চলের ঢাকা বিভাগের মধ্যে শুধুমাত্র ঢাকা থেকে কালিয়াপুর রুটে ১ সেট চলে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ২ সেট চলত। সেটা বন্ধ। ঢাকা-কুমিল্লা, ঢাকা-জয়দেবপুর ও ঢাকা-টঙ্গী রুটে বন্ধ। আখাউড়া-সিলেট এবং ময়মনসিংহ রুটেও বন্ধ।

এদিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সহকারী অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (সিওপিএস) মো. সাহেব উদ্দিন জানান, পূর্বাঞ্চলে ১৮ সেট ডেমুর মধ্যে এখন চট্টগ্রাম-নাজিরহাট রুটে ১ সেট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ সেট এবং লাকসাম-চাঁদপুর-নোয়াখালী রুটে ১ সেট চলে।
২০১৩ সালে চীন থেকে আমদানিকৃত ২০ সেট ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট (ডেমু) ট্রেন রেলের বহরে যুক্ত হয়েছিল। ওই বছরের ২৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী। পর্যায়ক্রমে ২০ সেট (৬০টি কোচ) ডেমু ট্রেন পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে যুক্ত হয়। ২০ সেটের মধ্যে পূর্বাঞ্চলে চালু করা হয়েছিল ১৮ সেট। শুরুতে পূর্বাঞ্চলে (চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগে) চলত ১৮ সেট। পশ্চিমাঞ্চলে চলত ২ সেট।
রেলওয়ের পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ডেমু ট্রেনগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে থাকলেও মেরামতের জন্য আলাদা ওয়ার্কশপ সাত বছরেও তৈরি হয়নি। ফলে নষ্ট ডেমুগুলো এখনো পর্যন্ত মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ডেমু মেরামতে স্পেয়ার পার্টস সংকট তীব্র বলে জানান পরিবহন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এছাড়া পূর্বাঞ্চলে চলাচলরত ৪ সেট ডেমু প্রায় সময় যান্ত্রিক ত্রুটির মধ্যে পড়ে। তাই ডেমুর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত তারা।
ডেমু নিয়ে জটিলতার বিষয়টি স্বীকার করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ডেমু ট্রেনগুলো মেরামতে বিশেষায়িত ওয়ার্কশপের প্রয়োজন। অন্যদিকে রেলের শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানান, ডেমু ট্রেন খাতে রেল কর্তৃপক্ষের আয়ের চেয়ে লোকসানের পরিমাণ অনেক বেশি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here