স্মৃতিতে গাথা
কবি:ফেরদৌস আহমেদ
কইরে আমার ছোট্ট বেলার
হারিয়ে যাওয়া সুখ,
আয়রে তোরে জড়িয়ে ধরে
ঠান্ডা করি বুক।
কইরে আমার রঙিন সুতা
কাঠের নাটাই কই,
কইরে ঘুড়ি আয়রে তোদের
একটু হাতে লই।
ছোট্ট বেলার সাধের লাটিম
কোথায় গেলি বল,
আয়রে কাছে দে মুছে দে
স্মৃতির নোনাজল।
পুতুল খেলার সঙ্গীরা সব
কোথায় গেলি সবাই,
শালিক পাখি রান্না করে
আয়রে সবাই খাই।
কোথায় আমার ঝড়ের দিনের
কুড়িয়ে পাওয়া আম,
আয়না তোদের একটু কুড়াই,
বৃষ্টিরা কই নাম।
কোথায় আমার বন্ধুরাসব
আন সবাইকে ডেকে,
একটুখানি সময় কাটাই
টেলিভিশন দেখে।
কোথায় আমার বাঁশের ধনুক
পাটের শোলার তীর,
আয়রে তোদের একটু ছুড়ে
মন করি স্থির।
আমার শখের ছাগল ছানা
সুন্দরী তুই কই,
আয়রে তোরে চরাই মাঠে
একটু রাখাল হই।
কাঁঠাল খেজুর সিমের বিচি
কোথায় তোরা গেলি
আয়না কাছে তোদের দিয়ে
জোড় না বেজোড় খেলি।
কোথায় আমার খড়কুটাতে
পুটলি বাঁধা বল
আয়রে তোরে একটু খেলি
চলরে মাঠে চল।
ছোট্ট বেলার বড়শি সুতা
কোথায় গেলি ভাই
চল না স্মৃতির নদীর তীরে
মাছ ধরিতে যাই।
কোথায় আমার ছোট্ট সোনা
ময়না পাখির ছা,
ফড়িং ধরতে আয় না রে যাই
লাল মিয়া মাস্টারের গায়।
কইরে আমার আমন ক্ষেতের
পোকায় কাটা ধান
আয়রে তোরে আঁচল ভরে
কুড়িয়ে জুরাই প্রাণ।
তিন বেয়ারিং কাঠের গাড়ি
কোথায় গেলি তুই
আয়না তোরে একটুখানি
হৃদয় দিয়ে ছুঁই।
ছোট্ট বেলার নাটাই ঘুড়ি
লাটিম পুতুল বল
দেখনা চেয়ে কেমনে আমার
ঝরছে আঁখি জল।
যেদিন তোদের ছেড়ে এলাম
শূন্য করে বুক,
সেদিন দিন থেকে তোদেরকে ভাই
আমার মনে পড়ে খুব।
উঠতে কাঁদি বসতে কাঁদি
চোখ করে ছলছল,
তোদের মত আসে না কেউ
মুছতে আঁখি জল।
এ সংসারের সবাই পাষাণ
পাষান এ সংসার
এদের দহন এদের পিড়ন
সয়না প্রাণে আর।
ছোট্ট বেলার দিনগুলি মোর
ধরছি তোদের পা
আবার তোরা তোদের কাছে
আমায় নিয়ে যা।
ছেড়ে দে সেই নাটাই ঘুড়ি
বল পুতুলের ভিড়ে
বাকি জীবন থাকব সেথায়
আসব নাকো ফিরে।